উরিব্বাস্ট! “মাস্তান” বটেক!

সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী: ‘এখানে মাস্তানি করবেন না, আমার চেয়ে বড় মাস্তান এখানে আর কেউ নেই!…’ উরিব্বাস! গুরু কী দিলেন মাইরি! জয়ন্তী দেবী, আপনি “মাস্তান” বটে| এক্কেবারে মাপা ‘সময়োচিত’ সংলাপ| এই কয়েক সেকেন্ডের ডায়ালগেই আপনি স্বঘোষিত “মাস্তান”-এর তকমা জুটিয়ে নিয়েছেন| বুকের পাটা না থাকলে সদ্য সন্তানহারা অভিভাবককে আঙুল নাচিয়ে মিঠুন চক্কোত্তি-স্টাইলে এমনটা বলতে পারতেন নাকি! রিল-লাইফ নয়, আপনি যে রিয়েল লাইফ “মাস্তান”!

সিনেমায় ফাটাকেষ্টর মুখে ‘মারবো এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে!…’ শুনে কেমন ভেতর ভেতর উত্তেজিত হতাম| আর মধ্য জানুয়ারিতে টিভির ক্লিপিংসে আপনার বচন শুনে শিহরিত হলাম| শিরদাঁড়া বেয়ে হিলহিল করে যেন একটা ভয়ের ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল| আপনি ছাড়া কবে কোন কর্পোরেট হাসপাতালের কর্ত্রী এমন চোখা ডায়ালগকে বাস্তবের মাটিতে প্রকাশ্যে আছড়ে ফেলতে পেরেছেন! স্বীকার করছি, এর জন্য অবশ্যই দম লাগে|

মানছি, বসেদের কাছে আপনার ‘কর্মদক্ষতা’ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই| নাহলে অমন “নামী” কর্পোরেট হাসপাতালের সামান্য ফ্রন্টঅফিস কর্মী (আবার শুনছি নাকি টাইপিস্ট) থেকে জেনারেল ম্যানেজার হয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট তথা ইউনিট-হেড হন আপনি! শোকসন্তপ্ত, সন্তানহারা বাবা-মাকে “সামলাতে” আপনাদের মতো “মাস্তান”-দেরই হয়তো এইসব বেসরকারি, কর্পোরেট হাসপাতালের প্রয়োজন। হয়তো আপনিই এসব হাসপাতালের কাছে ‘প্রাতঃস্মরণীয়’, ‘নমস্য’|

কারণে-অকারণে আপনাদের মতো হাসপাতালের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগের আঙুল উঠেছে, এখনও উঠছে, হয়তো ভবিষ্যতেও উঠবে| কিন্তু আপনি যে পথ দেখিয়েছেন, আর্ত বাবা-মাকে “ঠান্ডা” করতে এরপরে অন্যান্য হাসপাতালেও হয়তো এমন আরও অনেক “জয়ন্তী-মাস্তান” জন্ম নেবে| আড়ালে আপনি হয়তো তখন এমন মাস্তানির “পথিকৃৎ” হওয়ার আনন্দে মুচকি হাসবেন! কিন্তু “মাস্তানি” বড় ছোঁয়াচে রোগ জয়ন্তীদেবী| দেখবেন ম্যাডাম, থুড়ি, “মাস্তান”, ব্যুমেরাং না হয়ে যায়!

Comments