সেলাম সাংবাদিকতা
সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী: সুপ্রীত কৌরের কথা মনে পড়ে? একজন সাংবাদিক, নিউজ রিডার, অ্যাঙ্কর। বছরকয়েক আগে নিউজ স্টুডিওতে তখন খবর পড়ছেন সুপ্রীত। খবর টেলিকাস্ট চলাকালীন হঠাৎই ব্রেকিং নিউজ আসে। জানা যায়, মহাসমুন্দ এর পিঠারায় রেনো ডাস্টারে করে যাওয়া হর্ষদ কৌর নামে এক আরোহী দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এই হর্ষদই যে সুপ্রীতের স্বামী এটা জেনেও, ভেতরটা চুরমার হয়ে গেলেও, এত বড় শোকের মুহূর্তেও কর্তব্যচ্যূত হননি। সাংবাদিকতার কাজ যে বড় বালাই! আপাত বজ্রকঠিন মুখে স্বামী হর্ষদের সেই মৃত্যুসংবাদ পড়েন সুপ্রীত। এবং কর্তব্যে অবিচল থেকে নিউজ বুলেটিন পুরো পড়া হলে তবেই নিউজরুম ছাড়েন।
ভাবছেন পুরনো কাসুন্দি আবার কেন ঘাঁটতে বসলাম? কারণ আছে বৈকি। কয়েক বছর ঘুরে গেলেও ভিনরাজ্যের সুপ্রীত আর হাওড়ার দেবাশিস চক্রবর্তী, রাজু ভূঁইঞারা এক সুতোয় গাঁথা হয়ে থাকেন সাংবাদিকতার জন্য। সেটা পেশাদারিত্বের প্রতি প্রবল সম্মানের সূত্রে। সেটা সাংবাদিকতার প্রতি দুর্বার আকর্ষণের সূত্রে। সেটা সত্যকে সামনে আনার সৎ ইচ্ছার সূত্রে।
দেবাশিস, আপনি জানতেন ২০ মে, ২০২০-তে উম্পুনের দিন হাওড়া ব্রিজের ওপর দিয়ে ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি প্রতি ঘন্টার গতিবেগে বয়ে চলা ঘূর্ণিঝড়ে যেকোনও মুহূর্তে বিপদ হতে পারতো আপনার এবং ভিডিও জার্নালিস্ট রাজু ভূঁইঞার। কিন্তু কর্তব্যচ্যূত হননি আপনারা। জানা হয়নি তখন কি আপনার নিজের ছোট্ট সন্তানের মুখটি মনে পড়ছিল? বা রাজু, আপনার কি মনে পড়ছিল বাড়ির প্রিয়জনদের মুখগুলো? কী অনায়াস পেশাদারিত্বের সঙ্গে একটার পর একটা লাইভ করে গেলেন সেদিন। অবলীলাক্রমে আপাত বজ্রকঠিন মুখে কখনও ঝড়ের মুখে ঝুঁকে পড়ে, কখনও আবার হাওড়া ব্রিজের ওপর আধশোয়া হয়ে দর্শকদের জন্য তুলে আনলেন টাটকা-তাজা সুপার সাইক্লোনের ছবি।
আপনারা তো শুধু নিজের কর্তব্যই পালন করেননি সেদিন, সাংবাদিকতার নির্মম পেশাদারিত্বের সংজ্ঞাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। সাংবাদিককূলের হয়ে সপাটে চড় কষিয়েছেন যারা সাংবাদিক মানেই দেগে দেয় 'হলুদ সাংবাদিক' বা 'আলতা সাংবাদিক' অভিধায়। মনে করে সাংবাদিক মানেই চিটিংবাজ-তোলাবাজ। নিজেদের কর্তব্যে দৃঢ় অবিচল থেকে কষাঘাত করেছেন তাদের গালে, যারা অবজ্ঞার সুরে বলে ছোঃ! সত্যি বলার ধক নেই আবার সাংবাদিক হয়েছে শ্লা…। এরা কীকরে বুঝবে, ভূমিকম্প হলেও তার টিকার দিয়ে তবেই সাংবাদিকদের বহুতল ছেড়ে নামার পারমিশন মেলে! ঘূর্ণিঝড় হলে গ্রাউন্ড জিরো থেকে ব্রেকিং দিতে হয়। জানবে কীকরে, ২৪X৭X৩৬৫ এই পেশায় অনডিউটি থাকতে হয়! তারওপর সারাজীবন সময়ে মাইনে না হওয়া, বেতনকাঠামো না পাওয়া, বোনাস বকেয়া থাকা, বিনেপয়সায় জনসেবা করা, সংসার চালানোর কষ্ট, অফিস পলিটিক্স সামলানো, স্ট্যান্ডিং নাইট শিফট, উইকেন্ডেও বসে বসে খবর পাঠানো, পরিবার-আত্মীয়-পরিজন-স্বজনদের সময় না দেওয়া… আর কত বলবো!
কুডোস দেবাশিস চক্রবর্তী, কুর্নিশ রাজু ভূঁইঞা। আপনাদের দেখে সুকান্ত ভট্টাচার্যের 'রানার'-এর কথা মনে হচ্ছে। স্যালুট সৎ-সাহসী সাংবাদিকতাকে।
ছবি: সংগৃহীত
ভাবছেন পুরনো কাসুন্দি আবার কেন ঘাঁটতে বসলাম? কারণ আছে বৈকি। কয়েক বছর ঘুরে গেলেও ভিনরাজ্যের সুপ্রীত আর হাওড়ার দেবাশিস চক্রবর্তী, রাজু ভূঁইঞারা এক সুতোয় গাঁথা হয়ে থাকেন সাংবাদিকতার জন্য। সেটা পেশাদারিত্বের প্রতি প্রবল সম্মানের সূত্রে। সেটা সাংবাদিকতার প্রতি দুর্বার আকর্ষণের সূত্রে। সেটা সত্যকে সামনে আনার সৎ ইচ্ছার সূত্রে।
দেবাশিস, আপনি জানতেন ২০ মে, ২০২০-তে উম্পুনের দিন হাওড়া ব্রিজের ওপর দিয়ে ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি প্রতি ঘন্টার গতিবেগে বয়ে চলা ঘূর্ণিঝড়ে যেকোনও মুহূর্তে বিপদ হতে পারতো আপনার এবং ভিডিও জার্নালিস্ট রাজু ভূঁইঞার। কিন্তু কর্তব্যচ্যূত হননি আপনারা। জানা হয়নি তখন কি আপনার নিজের ছোট্ট সন্তানের মুখটি মনে পড়ছিল? বা রাজু, আপনার কি মনে পড়ছিল বাড়ির প্রিয়জনদের মুখগুলো? কী অনায়াস পেশাদারিত্বের সঙ্গে একটার পর একটা লাইভ করে গেলেন সেদিন। অবলীলাক্রমে আপাত বজ্রকঠিন মুখে কখনও ঝড়ের মুখে ঝুঁকে পড়ে, কখনও আবার হাওড়া ব্রিজের ওপর আধশোয়া হয়ে দর্শকদের জন্য তুলে আনলেন টাটকা-তাজা সুপার সাইক্লোনের ছবি।
আপনারা তো শুধু নিজের কর্তব্যই পালন করেননি সেদিন, সাংবাদিকতার নির্মম পেশাদারিত্বের সংজ্ঞাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। সাংবাদিককূলের হয়ে সপাটে চড় কষিয়েছেন যারা সাংবাদিক মানেই দেগে দেয় 'হলুদ সাংবাদিক' বা 'আলতা সাংবাদিক' অভিধায়। মনে করে সাংবাদিক মানেই চিটিংবাজ-তোলাবাজ। নিজেদের কর্তব্যে দৃঢ় অবিচল থেকে কষাঘাত করেছেন তাদের গালে, যারা অবজ্ঞার সুরে বলে ছোঃ! সত্যি বলার ধক নেই আবার সাংবাদিক হয়েছে শ্লা…। এরা কীকরে বুঝবে, ভূমিকম্প হলেও তার টিকার দিয়ে তবেই সাংবাদিকদের বহুতল ছেড়ে নামার পারমিশন মেলে! ঘূর্ণিঝড় হলে গ্রাউন্ড জিরো থেকে ব্রেকিং দিতে হয়। জানবে কীকরে, ২৪X৭X৩৬৫ এই পেশায় অনডিউটি থাকতে হয়! তারওপর সারাজীবন সময়ে মাইনে না হওয়া, বেতনকাঠামো না পাওয়া, বোনাস বকেয়া থাকা, বিনেপয়সায় জনসেবা করা, সংসার চালানোর কষ্ট, অফিস পলিটিক্স সামলানো, স্ট্যান্ডিং নাইট শিফট, উইকেন্ডেও বসে বসে খবর পাঠানো, পরিবার-আত্মীয়-পরিজন-স্বজনদের সময় না দেওয়া… আর কত বলবো!
কুডোস দেবাশিস চক্রবর্তী, কুর্নিশ রাজু ভূঁইঞা। আপনাদের দেখে সুকান্ত ভট্টাচার্যের 'রানার'-এর কথা মনে হচ্ছে। স্যালুট সৎ-সাহসী সাংবাদিকতাকে।
ছবি: সংগৃহীত
Comments
Post a Comment