Posts

Showing posts from December, 2019

উরিব্বাস্ট! “মাস্তান” বটেক!

সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী: ‘এখানে মাস্তানি করবেন না, আমার চেয়ে বড় মাস্তান এখানে আর কেউ নেই!…’ উরিব্বাস! গুরু কী দিলেন মাইরি! জয়ন্তী দেবী, আপনি “মাস্তান” বটে| এক্কেবারে মাপা ‘সময়োচিত’ সংলাপ| এই কয়েক সেকেন্ডের ডায়ালগেই আপনি স্বঘোষিত “মাস্তান”-এর তকমা জুটিয়ে নিয়েছেন| বুকের পাটা না থাকলে সদ্য সন্তানহারা অভিভাবককে আঙুল নাচিয়ে মিঠুন চক্কোত্তি-স্টাইলে এমনটা বলতে পারতেন নাকি! রিল-লাইফ নয়, আপনি যে রিয়েল লাইফ “মাস্তান”! সিনেমায় ফাটাকেষ্টর মুখে ‘মারবো এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে!…’ শুনে কেমন ভেতর ভেতর উত্তেজিত হতাম| আর মধ্য জানুয়ারিতে টিভির ক্লিপিংসে আপনার বচন শুনে শিহরিত হলাম| শিরদাঁড়া বেয়ে হিলহিল করে যেন একটা ভয়ের ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল| আপনি ছাড়া কবে কোন কর্পোরেট হাসপাতালের কর্ত্রী এমন চোখা ডায়ালগকে বাস্তবের মাটিতে প্রকাশ্যে আছড়ে ফেলতে পেরেছেন! স্বীকার করছি, এর জন্য অবশ্যই দম লাগে| মানছি, বসেদের কাছে আপনার ‘কর্মদক্ষতা’ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই| নাহলে অমন “নামী” কর্পোরেট হাসপাতালের সামান্য ফ্রন্টঅফিস কর্মী (আবার শুনছি নাকি টাইপিস্ট) থেকে জেনারেল ম্যানেজার হয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট তথা ইউনিট-হেড হন আপনি! শোকস...

কুর্নিশ সুপ্রীত

সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী: সুপ্রীতজি, আপনি কি কখনও কবি সুকান্তের কবিতাটা পড়েছিলেন? নাহলে অমন মনের জোর পান কোত্থেকে! আপনাকে দেখে আজ রানারের কথা বড্ড মনে পড়ছে। আপনিও তো তাই। সঠিক সময়ে সংবাদ পৌঁছে দিতে স্বামীর (হর্ষদ কৌর) মৃত্যুসংবাদটাও কী অনায়াস পেশাদারিত্বের সঙ্গে দেখালেন। অবলীলাক্রমে আপাত বজ্রকঠিন মুখে (ভেতরটা যে আপনার চুরমার হচ্ছে তখন কি ছাই বুঝেছি!) ব্রেকিং নিউজ করলেন গাড়ি দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর খবর। আপনি জানতেন মহাসমুন্দ এর পিঠারা দিয়েই রেনো ডাস্টারে হর্ষদের যাওয়ার কথা ছিল চার সঙ্গীকে নিয়ে। কিন্তু সাংবাদিকতার কাজ যে বড় বালাই! এত বড় শোকের মুহূর্তেও কর্তব্যচ্যুত হননি। পুরো খবর (সঙ্গে স্বামীর মৃত্যুসংবাদও) পড়ে তবেই নিউজরুম ছেড়েছেন। আপনি তো শুধু নিজের কর্তব্যই পালন করেননি সাংবাদিকতার নির্মম পেশাদারিত্বের সংজ্ঞাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন। সাংবাদিককূলের হয়ে সপাটে চড় কষিয়েছেন যারা সাংবাদিক মানেই চিটিংবাজ-তোলাবাজ ভাবে। অবজ্ঞার সুরে বলে ছোঃ! সত্যি বলার ধক নেই আবার সাংবাদিক হয়েছে শ্লা…। এরা কীকরে বুঝবে ভূমিকম্প হলেও তার টিকার বা ব্রেকিং দিয়ে তবেই সাংবাদিকদের বহুতল ছেড়ে নামার পারমিশন মেলে! ...

অর্ধমৃতের উপলব্ধি

সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী: উত্তরে ফেল, হাত-সাইকেল। আবার, আবারও গালভরা এক্সিট পোলকে (বিশেষত উত্তরপ্রদেশ নিয়ে) বলে বলে গোল দিল এবারের জনমত। এই প্রথায় অবিশ্বাস না থাক, অনিশ্চয়তা আরেকটু জোরালোই হলো। তবে একটা ব্যাপারে নিশ্চিত, আগামী ভোটে আবারও সংবাদমাধ্যমে একইভাবে প্যানেলিস্টরা বসবেন। বুথ ফেরত সমীক্ষা চলবে। সার্ভে মেলা না মেলা তো ভবিষ্যতের গর্ভে। চিকিৎসাশাস্ত্রের মতো এই সমীক্ষারও তো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে। তাহলে বারবার ফল না মেলার কারণ কী? ডাক্তাররা রোগ ধরতে না পারলে যদি গাফিলতি, তাহলে সংবাদমাধ্যম জনগণের নাড়ি না বুঝলে তা কি শুধুই ব্যর্থতা? আসলে উত্তরটা অত সহজ নয়। অথচ কী অনায়াসে আমরা গাফিলতি আর ব্যর্থতাকে এক করে ফেলছি। বিশেষত চিকিৎসাক্ষেত্রে। কয়েকজনের গাফিলতিকে হাতিয়ার করে সব ডাক্তারকে ভিকটিমাইজড করা যেমন মোটেই কাজের কথা নয়। আবার অনেকসময় চিকিৎসকের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়াকে গাফিলতি বলে চালানোও কি যুক্তিযুক্ত? মানছি, ‘ঐতিহাসিক’ স্বাস্থ্য-সিদ্ধান্তে (অত্যুৎসাহীরা আবার ফেব্রুয়ারি বিপ্লব বলছেন!) বেসরকারি হাসপাতালের স্বেচ্ছাচারিতায় লাগাম পড়লেও পড়তে পারে। কিন্তু পিঠ বাঁচাতে এরা ফাঁক যে খুঁজবেই, হলফ ...

বাড়িয়ে দাও ভরসার হাত

সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী: ক্রেডিট, হোয়‍্যার ক্রেডিট ডিউ। চিত্র ১- আন্দুল রোডের ধারে কর্পোরেট হাসপাতাল। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে একমনে আগের ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশন দেখছেন মধ্যবয়সী চক্ষু শল্যচিকিৎসক। উল্টোদিকে উদ্বিগ্ন আমি আর পরিজন। আগের সব ওষুধ বন্ধের নিদান দিয়েছেন বেশ খানিকক্ষণ পরীক্ষার পরে। রেমিডি,স্রেফ আই-ম্যাসাজ। সঙ্গে চেতাবনি, অপ্রয়োজনে ফিজ দিয়ে তাঁকে যেন না দেখাতে যাই। বলে কী! হ্যাঁ, কাজও হয়েছিল তাঁর টোটকায়। এই ডাক্তার-রোগী মুষলপর্বে, বেসরকারি হাসপাতালেও এমন মানবিকতা! সত্যিই দেখেছিলাম সেদিন। কাট টু ২০০৯। এমনই এক বসন্তে টকটকে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া আর পলাশ চারপাশ ঝলসে দিচ্ছে। এদিকে আমার ওই আপনজনের চোখও রগড়ে লাল। সঙ্গে কড়কড়ে ভাব আর অনবরত জল ঝরা। গেলাম গেরামভারী চক্ষুবিশেষজ্ঞের চেম্বারে। দিল্লির নামজাদা সরকারি হাসপাতালের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার। “কী করে এনেছেন?” বলেই যুগপৎ আশ্বাসবাণী। আবার আগের ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশন দেখেই তাচ্ছিল্যের ভাব। খসখস করে নতুন আইড্রপ। পরের কয়েকমাস শুধু চেম্বার আর ঘর। কিন্তু যে কে সেই। প্রথমদিন আগের ডাক্তারের যে ওষুধ দেখে হেসেছিলেন, সেগুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দিতে লাগলেন ...